জাতির পিতার আগমন : স্মৃতি ধন্য কনিকারা।
তারিখ : ১০/০৮/২০২০ খ্রি.
মেঘনা, তিতাস ও পাগলা নদীর শীতল জলধারায় বিধৌত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলাধীন। কনিকারাের পবিত্র মাটি সগৌরবে এক মহান স্মৃতি বুকে ধারণ করে আছে ৭০ টি বছর ধরে। একটি সদ্য স্থাপিত শিক্ষাঙ্গন “কনিকারা হাই স্কুল” (বর্তমানে কনিকারা উচ্চ বিদ্যালয়) যার পবিত্র হাতের পরশে দ্বারােদঘাটনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সময়টা ছিল ১৯৪৯ সনের গােড়ার দিকে। সেদিন বঙ্গবন্ধুর সাথে সফর সঙ্গী হয়ে এসে কনিকারাকে ধন্য করেছিলেন বিখ্যাত গায়ক আব্বাসউদ্দিন, সােহরাব হােসেন ও বেদারউদ্দিন আহম্মদ। পাকিস্তান ফুড ডিপার্টমেন্টের ডাইরেক্টর জেনারেল জনাব এন.এম, খান সিএসপি আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এসেছিলেন ( পূর্বে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার জনপ্রিয় এসডিও ছিলেন) । স্কুল। মাঠে জমায়েত হওয়া বিশাল জনসমুদ্রের সামনে দাড়িয়ে উপস্থিত সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে তার আগুন। ঝরা বক্তৃতায় স্কুলটিকে সাহায্যের জন্য অনুরােধ করেছিলেন। সেদিন জনাব খান আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। স্কুলটিকে দেখবেন, কিছু করতে চেষ্টা করবেন। বক্তৃতা শেষে আগত গায়কগণ গান গাইলেন অধিক রাত পর্যন্ত। প্রত্যক্ষ দর্শী কনিকারা গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি জনাব নুরু মিয়া ও আলতাব আলী আজও সেই স্মৃতি নবীন প্রজন্মের কাছে বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তক্কালিন এ স্কুলের শিক্ষক মরহুম আবদুল গফুর সাহেবের ছেলে জনাব মাহবুবুর রহমান তাঁর পিতার বরাত দিয়ে বলেন সেদিন বঙ্গবন্ধুকে এক নজর দেখার জন্য কয়েক হাজার লােক সমাগত হয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম ও আন্তরিকতায় সদ্য। দ্বারােদঘাটিত স্কুলটির সার্বিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছিল। এমনি একটি গৌরবােজ্জ্বল আয়ােজনের রূপকার ছিলেন পার্শ্ববর্তী উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের মরহুম এ.কে. রফিকুল হােসেন। বিগত ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ খ্রি. মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব মােহাম্মদ এবাদুল করিম (২৪৭, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ০৫) জাতির পিতার মহান স্মৃতি বিজড়িত স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বলেন- এ স্কুলে জাতির পিতার আগমন হওয়ায় নবীনগর উপজেলা তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনগন স্মৃতি ধন্য হয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির জীর্ণ অবস্থা থেকে উত্তরণে এমনকি জাতীয়করণের লক্ষে তিনি কাজ করবেন। তৎকালিন অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক মরহুম আবুল হাশেম মাষ্টারের সুযােগ্য সন্তান জনাব এড. শাহ জিকরুল আহমেদ (সাবেক সাংসদ, ২৪৭ ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৫) বলেন এ স্কুলে বঙ্গবন্ধুর আগমন আমাদের নবীনগর বাসির জন্য সবচেয়ে বিরল গৌরবময় স্মৃতি। এদিকে ১৭ মার্চ ২০২০ খ্রি. ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুযােগ্য জেলা প্রশাসক জনাব হায়াত-উদ-দৌলা খান এর উদ্যোগ ও অর্থায়নে এবং নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মােহাম্মদ মাসুম এর তত্ত্বাবধানে জাতির পিতার স্মৃতিতে স্কুল মাঠের পাশে “জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত স্থান” শীর্ষক একটি স্মৃতি ফলক স্থাপন। করেন। ফলকটি স্থাপন করে জাতির পিতার স্মৃতি রক্ষার প্রয়াসের জন্য অত্র এলাকার জন সাধারন অত্যন্ত। আনন্দিত হয়েছে। শিক্ষাবান্ধব সরকার প্রধান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট অত্র এলাকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও জন সাধারণের আকুল আবেদন জাতির পিতার হাতে। দ্বারােদঘাটিত এ প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করে এর সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করবেন। আমার
তথ্যসূত্র : অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের বর্ণনা।
কে ফেরদাউস বহাল মডে নং- ২৬৯১৮ অধ্যক্ষ (ভারত)।
* বৰীফার, ব্রাহ্মণবাড়ি। মােবাইল : ০১৭১৭৬৮৪৩১৫